ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলা কি খুব কঠিন?

আপনি শারীরিকভাব সুস্থ সবল থাকতে চান? তাহলে আপনার প্রয়োজন ফিটনেস একটি সঠিক রুটিন। শুধু রুটিন তৈরি করলে তো চলে না। ব্যয়াম বা শারীরিক কসরতকে দীর্ঘ মেয়াদি অভ্যাসে পরিণত করতে হয়।

2/20/20241 min read

woman in white tank top and black shorts lying on green grass field during daytime
woman in white tank top and black shorts lying on green grass field during daytime

পনি শারীরিকভাব সুস্থ সবল থাকতে চান? তাহলে আপনার প্রয়োজন ফিটনেস একটি সঠিক রুটিন। শুধু রুটিন তৈরি করলে তো চলে না। ব্যয়াম বা শারীরিক কসরতকে দীর্ঘ মেয়াদি অভ্যাসে পরিণত করতে হয়। এখানে একজন আনফিট ব্যক্তি থেকে সুঠাম পুরুষদীপ্ত শরীরে পরিণত হতে কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করা হয়েছে।

মিঃ আনফিট থেকে মিঃ সুঠাম বা ফিট হবার জন্য প্রয়োজন আন্তরিক ইচ্ছা এবং উৎসাহ। আসুন আজ আমরা একটি স্বাস্থ্যকর ব্যায়াম রুটিন শুরু করি এবং তা বজায় রাখার জন্য করনীয় কাজ সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করি।

আপনি যদি একেবারে অলস হয়ে যান, এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে চান, তাহলে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শারীরিক শক্তি অরজন করতে হলে প্রথমেই দরকার মানসিক শক্তি। মন থেকে আলস্য ছেড়ে যদি ব্যায়াম করতে শুরু করেন, তবে জেনে রাখুন এটি আপনার সারাদিনের সকল কাজকে প্রভাবিত করতে শুরু করবে। একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যায়ামের রুটিন তৈরি এবং অনুসরণ করার মাধ্যমে একটি ফলপ্রসূ এবং উপভোগ্য অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।

অল্প থেকে শুরু করুন: যদি চিন্তা করেন সকল কসরত আজ‌‌ই করবো আর দুদিনেই হয়ে যাবেন পালোয়ান। তাহলে পালোয়ান হ‌ওয়া তো বহুদূর ব্যায়াম আপনার জীবন থেকে পলায়ন করবে। খুব তাড়াতাড়ি খুব বেশি করার চেষ্টা করার সাধারণ ভুল এড়িয়ে চলুন। হঠাৎ অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে পেশী ব্যথা হতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ মিনিটের হাঁটা বা ৫টি করে ২সেট (Push-ups) বা বুকডন এবং ৫টি করে ২সেট (Squats) ডন - বৈঠক এবং মতো হালকা দিয়ে ব্যায়াম শুরু করুন। আপনি শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি করার সাথে সাথে ধীরে ধীরে আপনার ব্যায়ামের সময়কাল এবং তীব্রতা বাড়ান।

ব্যায়ামের জন্য উৎসাহ খুঁজুন: শারীরিক কসরত শুরু করার সাথে নিজেকে অনুপ্রানিত রাখা অত্যন্ত জরুরি। ব্যায়াম করতে আপনার আগ্রহ না থাকলে আপনি কাঙ্খিত ফল পাবেন না। মানসিক শক্তি বাড়ানোর জন্য সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে শরীর ও মন চাঙ্গা করতে পারেন। নানা রকম ব্যায়াম, যেমন যোগব্যায়াম থেকে শুরু করে মার্শাল আর্ট এবং অন্যান্য আকর্ষক শারীরিক কসরত যা আপনার ভাল লাগে তা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আসল কথা হচ্ছে, যতক্ষণ না আপনি এমন কিছু খুঁজে পান যা আপনার ভাল লাগে করে ততক্ষণ পর্যন্ত বিভিন্ন বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা করুন।

নিজেকে চ্যালেঞ্জে করুনঃ কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে হলে প্রতিদিন বায়াম করার সময় নিজের শারিরিক সক্ষমতা কে চ্যালেঞ্জে করুন এবং সেটা উপভোগ করুন । প্রথম সপ্তাহে ১০ মিনিটের হাঁটা বা ৫টি করে ২সেট (Push-ups) বা বুকডন এবং ৫টি করে ২সেট (Squats) ডন - বৈঠক নিয়মিত করার পরে দ্বিতীয় সপ্তাহে ৩০ মিনিটের হাঁটা বা ৫টি করে ৮সেট (Push-ups) বা বুকডন এবং ১০ টি করে ৩সেট (Squats) ডন - বৈঠক দিন। এভাবে নিজেরসক্ষমতাকে উন্নত করুন। আপনি অবশ্যই ইতিবাচক ফল পাবেন।

বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং অগ্রগতি লক্ষ্য করুন: অনুপ্রাণিত এবং মনোযোগী থাকার জন্য স্পষ্ট এবং অর্জনযোগ্য লক্ষ্য স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কার্যকর পদক্ষেপগুলিতে বিভক্ত করুন এবং লক্ষ্যগুলি নথিভুক্ত রাখুন। হতে পারে, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ওজন উত্তোলন, ওজন পরিবহন, এক কিলোমিটার দৌড় সম্পূর্ণ করা, একটি নির্দিষ্ট ফিটনেস মাইলফলক অর্জন ইত্যাদি। একটি নোটে বা ফিটনেস অ্যাপ বা এমনকি ফটো তোলার মাধ্যমে আপনার অগ্রগতি নিরীক্ষণ করুন। মাইলফলক অর্জন করতে পারলে অবশ্যই নিজেকে পুরুস্কৃত করুন।

ব্যায়ামকে প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করুন: আপনার দৈনন্দিন জীবনকে ব্যায়ামের সাথে যুক্ত করে একটি দীর্ঘমেয়াদী অভ্যাসে পরিণত করা গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি সময় ঠিক করুন যা আপনার জন্য সবচেয়ে ভাল কাজ করে। একটি নির্দিষ্ট সময় তা হতে পারে সকাল, দুপুর বা সন্ধ্যায়। আপনার সময়সূচীতে এটিকে অগ্রাধিকার দিন। ঐ সময়টা হতে হবে একান্ত আপনার অনুশীলনের জন্য নির্দিষ্ট, মনোনিবেশের জন্য আদর্শ। তবে জরুরী অবস্থার জন্য ব্যতিক্রম হতে পারে। ব্যায়ামকে আরও আনন্দদায়ক করতে বন্ধু খোঁজেন বা দলবদ্ধ হবার কথা বিবেচনা করুন।সময়ের সাথে সাথে, ব্যায়াম আপনার জন্য রুটিনের একটি স্বাভাবিক এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে।

উপভোগ করুন মুহুর্তগুলো: মনে রাখবেন যে, ব্যায়াম শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য নয় বরং মানসিক সুস্থতার জন্যও দরকার। ব্যায়ামের জন্য যে সুবিধাগুলি অর্জন করছেন, যেমন বর্ধিত শক্তি, উন্নত মেজাজ, উন্নত আত্মবিশ্বাস এবং উন্নত সৃজনশীলতা প্রভৃতি প্রতি মুহুর্তে উপভোগ করুন। এজন্য আবার নিজেকে কঠোর ও খুব বেশি স্থির হওয়া এড়িয়ে চলুন। আপনি যদি একটি অনুশীলন বাদ পড়ে যায় বা ছুটির দিন থাকে, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরদিন ফিরে আসুন।

নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে, আপনি আত্মবিশ্বাসের সাথে আপনার শারীরিক উন্নয়নের যাত্রা শুরু করতে পারেন এবং একটি টেকসই ব্যায়াম রুটিন স্থাপন করতে পারেন। অনুশীলনের মাধ্যমে আপনার শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতায় যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে সেটা উপভোগ করুন।